পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা: আতঙ্কের ছায়ায় কাশ্মীরের সৌন্দর্য

২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের শেষদিকে, পেহেলগামের এক ব্যস্ত পর্যটন এলাকায় আচমকাই সন্ত্রাসবাদীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারীরা মোটরবাইকে এসে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি কনভয়কে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। পাল্টা গুলিবিনিময়ে দু’জন সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়, তবে দুঃখজনকভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্য শহিদ হন এবং কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হন।

২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের শেষদিকে, পেহেলগামের এক ব্যস্ত পর্যটন এলাকায় আচমকাই সন্ত্রাসবাদীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারীরা মোটরবাইকে এসে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি কনভয়কে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। পাল্টা গুলিবিনিময়ে দু’জন সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়, তবে দুঃখজনকভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্য শহিদ হন এবং কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হন।

হামলার খবর পাওয়া মাত্রই, সেনাবাহিনী এবং পুলিশ যৌথভাবে বিশাল তল্লাশি অভিযান চালায়। পুরো পেহেলগাম অঞ্চল ঘিরে ফেলা হয়। ড্রোন ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন নজরদারি প্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্দেহভাজনদের খোঁজ চালানো হয়। প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, যাতে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা এই হামলায় চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই জানান, তারা গুলির শব্দ শুনেই দোকানপাট বন্ধ করে বাড়ির ভিতরে আশ্রয় নেন। বহু পর্যটকও মাঝপথে তাদের ভ্রমণ বাতিল করে ফিরে যান। আতঙ্কের কারণে পেহেলগামে পর্যটন শিল্পে বড় ধাক্কা লাগে। হোটেল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো একেবারে ফাঁকা হয়ে পড়ে।

কেন্দ্রীয় সরকার ও জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন এই হামলার নিন্দা জানিয়ে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কঠোর ভাষায় বলেন, “দেশের মাটিতে সন্ত্রাসবাদ বরদাস্ত করা হবে না। দোষীদের চরম শাস্তি দেওয়া হবে।” পাশাপাশি অমরনাথ যাত্রার জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

পেহেলগাম হামলার নিন্দা জানিয়ে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরীহ মানুষের উপর এমন সহিংসতা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। প্রতিবেশী দেশগুলোকেও আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনার পর পেহেলগামের পর্যটন শিল্প স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে প্রশাসন ইতিমধ্যেই পর্যটকদের আশ্বস্ত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, পর্যটন কেন্দ্রে বিশেষ হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে এবং পর্যটকদের জন্য ২৪ ঘণ্টার হটলাইন খোলা হয়েছে।

পেহেলগামের সাধারণ মানুষ শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে পেতে চায়। তারা চায়, সন্ত্রাসবাদ যেন চিরতরে নির্মূল হয় এবং পেহেলগাম যেন আবারও তার পুরনো রূপে ফিরে আসে — যেখানে পাহাড়, নদী আর নির্ভয়তার ছায়ায় মানুষের জীবন চলে।

পেহেলগাম হামলা আমাদের আবার মনে করিয়ে দিল, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এখনো শেষ হয়নি। প্রতিটি প্রাণ, প্রতিটি পরিবার, প্রতিটি শহর নিরাপদ রাখার জন্য আমাদের আরও বেশি সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ভালোবাসা, শান্তি আর মানবতার শক্তিতেই আমরা এই অন্ধকারকে জয় করব। পেহেলগাম আবারও হাসবে, আবারও স্বপ্ন দেখবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *